ক্ষমা প্রার্থনা এবং তওবা ( ইস্তেগফার) করারর দোয়া

ক্ষমা প্রার্থনা এবং তওবা ( ইস্তেগফার) করারর দোয়া

আসসালামু আলাইকুম আররাহমাতুল্লাহ, বান্দা ভুল করবে আর আল্লাহ তালা ক্ষমা করবেন এটাই স্বাভাবিক। আমরা দৌনন্দিন জীবনে চলা ফিরে করতে গিয়ে কতনা ভুল করে থাকি কতনা গুনাহ মনের অজান্তে করে থাকি। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন ওই ব্যক্তি উত্তম যে মনের অজান্তে পাপ করে এবং অনুসূচনা করে এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই. আজ আমি আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা ও তওবা করা সম্পর্কে আলোচনা করবো ইনশাল্লাহ

ইস্তেগফার বা তওবা করার দোয়া গুলির মধ্যে সবথেকে সহজ এবং ছোট দোয়াটি হল:-

– أَستَغْفِرُ اللهَ

আস্তাগফিরুল্লাহ।

আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর একবার আল্লাহকবার পড়ার পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ইসতেগফারটি ৩ বার পড়তেন। (মিশকাত)

– أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ

উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ইসতেগফারটি প্রতিদিন ৭০/১০০ বার তার অধিকবার পড়তেন (বুখারি) আল্লাহ তালা আমাদেরসবাইকে উক্ত আমলটি করার তৌফিক দেন করুন আমিন

আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি ও মিশকাত শরীফে এসেছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন। অতএব উক্ত আমলটি আমাদের জন্য অপরিহার্য।

– رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ

উচ্চারণ : ‘রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।’

রাসূল (সঃ) এই দোয়াটি যে পথ করবে তার সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নকারী হয়।

– أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ

উচ্চারণ : ‘আস্‌তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।’

অর্থ : ‘আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)

সাইয়েদুল ইসতেগফার পড়া

রাসূল (সঃ) বলছেন যদি কোন ব্যক্তি এই দোয়া বা ইস্তাগফারটি মন থেকে দৃঢ় ভাবে সকালে অর্থাৎ ফজরের নামাজের পর পাঠ করে আর সে যদি সন্ধ্যা হওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করে তবে সে জান্নাতি। আর কোন ব্যক্তি এই দোয়া বা ইস্তাগফারটি মন থেকে দৃঢ় ভাবে সন্ধ্যা অর্থাৎ মাগরিবের নামাজের পর পাঠ করে আর সে যদি সকাল হওয়ার আগে মৃত্যুবরণ করে তবে সে জান্নাতি।

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহ্দিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগ্ফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।’

অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নেয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গোনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।’ (বুখারি)

মহান আল্লাহতালা সূরা নিসার মধ্যে বলেছেন:-

– وَمَن يَعْمَلْ سُوءًا أَوْ يَظْلِمْ نَفْسَهُ ثُمَّ يَسْتَغْفِرِ اللّهَ يَجِدِ اللّهَ غَفُورًا رَّحِيمًا

“যে গোনাহ করে কিংবা নিজের অনিষ্ট করে, অতপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়।” (সুরা নিসা : আয়াত ১১০)

এছাড়াও, ১৪৫-১৪৬ আয়াতে আল্লাহতালা বলেন :-
“নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে অবস্থান করবে এবং তুমি কখনও তাদের জন্য সাহায্যকারী পাবে না। কিন্তু যারা তওবাহ করে ও সংশোধন হয় তারা ব্যতিত।”

তাছাড়াও সূরা নূর এর ৩১ নং আয়াতে বলা হয়েছে:-
“হে মুমিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।”

সবশেষ, আল্লাহ তালা আমাদেরকে সকল ধরনের পাপ ও অনাচার থেকে মুক্ত রাখুন। এবং আমাদেরকে বেশি বেশি দোয়া, ক্ষমা ও ইস্তেগফার করার তাওফিক দেন করুন এবং আমাদের কে খাঁটি মোমিন বান্দা ও মুসলমান না করে কবরে নিও না. আমাদেরকে বেশি বেশি সৎ আমল করার তাওফিক দেন করুন আমিন।